রীতা বিশ্বাস পান্ডে

আবার আমার অসময়ে চলে যাওয়া

রীতা বিশ্বাস পান্ডে




এই মেয়েটা, নাম কিরে তোর? সেবাই থাকিস রাত দিন ভোর। মায়ের যতো মমতা দয়া দেখতে পাচ্ছি তোর অন্তর। ওই যে দেখো সুন্দর পাড়া, তার মাঝে ওই ছোট্ট  বাড়ি। তার যে মেয়ে সিদ্ধি আমি। মমতাময়ী মা যে আমার রাতের খাবার খাইয়ে,পাঠান তবে সেবায় দেশের তরে। দেশের দশের সেবায় মাতিস একটুখানি নিজের খেয়াল রাখিস। কোথায় কোন রাক্ষস খোক্কশ  আছে যে ঘাপটি মেরে! ভয় পেয়ো না দেশ আমার, ওরা যে আমার সতীর্থ। নির্ভয়ে আমরা সেবা করি সব বাধা পেরিয়ে। কিন্তু, সব বিশ্বাসের পথ ভেঙে আসি যখন পোস্টমর্টেম টেবিলে, শিউরে উঠে সবাই তখন আমার এই ভয়াবহ রূপটা দেখে। কাজল চোখে রক্ত আমার, শিহরিত  করে সবারে,  গালে আঁচড় ঠোঁটে কামড় মা-বাবারে করে  বিচলিত। ক্ষমা নয় ক্ষমা নয় এ জঘন্য অপরাধের। বিচার করতে হবেই হবে এই  বিকৃত মানসিকতার।


এবার পথ দেখানোর পালা


মেয়েটাকে দুমুঠো খাইয়ে পাঠিয়েছিলাম আমি মা 
যা বাপু হসপিটালে যা দেরি করিস না। 
কত রোগী ঠিকঠাক পথ্য পাবে বলে
অধীর আগ্রহে তোদের পথ চেয়ে  আছে শুয়ে। 
সেই যে স্টেথোস্কোপ গলায় ঝুলিয়ে গেল মেয়েটা 
ফিরে এল না মেয়েটা পেরিয়ে যায় ঘন্টা।  
আমরা মা বাবা থাকি কি করে বলো
মেয়ের পথটা একবার খুঁজে আসি চলো।
এলো না ফিরে আর মেয়েটি আমার
মা বাবা আমরা খুবই যে লাচার। 
কেন এমন হয় বুঝিনা হায় আমি 
বাড়ি থেকে বেরিয়ে কোথায় হারায়  জানি?
খুঁজতে গিয়ে অনেক কাঠ খড় পোড়াই
তবু খুঁজে পাই না তারে আমরা সবাই। 
পাইনা কোথাও খুঁজে তাকে আমরা  মায়েরা
ক্লান্তিহীন দুচোখে আমাদের শুধুই জিজ্ঞাসা।
মেয়ে কি আমার পাবে ঘরে ফেরার রাস্তা?
পথ হারিয়ে যাওয়া এতই কি সোজা? 
মেয়ে আমার খুঁজে পাবে কি তার অস্তিত্ব? 
মেয়ে আমার খুঁজে পাবে কি তার সম্মান? 
মেয়ে আমার খুঁজে  পাবে কি তার স্বপ্ন? 
মেয়ে আমার খুঁজে পাবে কি তার পৃথিবী? 
চলো সবাই মিলে তাকে দেখায় পথ । 
স্বাধীন  পৃথিবীতে তার নিজস্ব পথ।

পাঠকের মতামতঃ